অনুপমা চক্রবর্তী অতিথি, বিশেষ প্রতিনিধি :
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সৃষ্টি করেছে নানামুখী সমস্যার। দিন দিন যেন নতুন নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়েই চলেছে। এক দিকে মানুষের জীবন সংকটাপন্ন। অন্যদিকে জাতির ভবিষ্যৎ হয়ে উঠছে অনিশ্চিত। করোনার তান্ডব যেন প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনকে জটিল থেকে জটিলতর করেই চলেছে।
আর্থিক, মানসিক, সামাজিক বিভিন্ন সমস্যায় আমরা প্রতিনিয়ত জর্জরিত হয়েই চলেছি।আমরা কেউ নিশ্চিতভাবে জানিনা কবে আমাদের মুক্তি মিলবে। কিন্তু এই মহামারীর প্রকোপ কমে গেলে হয়তো আমরা এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারব কিন্তু শিক্ষায় যে সংকট এর মুখে আমরা পড়েছি তার সমাধান দ্রুত পাবো বলে মনে হচ্ছে না।
এবছরের এপ্রিল মাসে এইচ.এসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার কথা থাকলেও তা করোনার জন্য আটকে রয়েছে।এতে করে শিক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পরে রয়েছে।তারা নিশ্চিতভাবে জানেই না তাদের পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে। যার ফলে তাদের পড়ালেখার গতি হ্রাস পাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে,
এতে তাদের ভবিষ্যতে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এমন অনেক পরীক্ষা আটকে রয়েছে।স্নাতক এর শেষ পর্যায়ে এসেও আটকে রয়েছে অনেকে।
করোনাকালীন সময়ে কিছুটা হলেও শিক্ষার সংকট হতে যেন শিক্ষার্থীরা মুক্ত হতে পারে এই জন্য নানামুখী ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।কিন্তু সরকার সকল শিক্ষার্থীকে এর আওতায় আনতে সক্ষম হয় নি।শহরের তুলনায় গ্রামের শিক্ষার্থীরা আরো বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
আমরা দেখছি মাধ্যমিক পর্যায়ে সংসদ টিভিতে ক্লাসের ব্যাবস্থা করা হয়েছে।যাতে করে শিক্ষার্থীরা চর্চার মধ্যে থাকতে পারে।এ ক্ষেত্রে অনেকেই তাদের ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছে।কিন্তু এমন অনেক পরিবার রয়েছে যাদের টিভিই নেই তাদের কিন্তু আমরা এ ব্যাবস্থার আওতায় আনতে পারছি না।
আবার বিশ্ববিদ্যালয় গুলো অনলাইন ক্লাসের ব্যাবস্থা করেছে।কিন্তু প্রতিটি শিক্ষার্থী এ ক্লাসে অংশ নিতে পারছে না।এক্ষেত্রে যারা শহরে বাস করছে তারা কিছুটা হলেও অংশ নিতে পারছে কিন্তু অনেক সময় দেখা যাচ্ছে ক্লাসের মাঝে ইলেক্ট্রিসিটি চলে যাচ্ছে তখন তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পরছে।আর যারা গ্রামে অবস্থান করছে তারা ঠিক ভাবে নেট কানেকশন করতে পারছে না।
এছাড়াও অনলাইন ক্লাসে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ক্লাস রুমে যখন শিক্ষার্থীদের পড়ানো হতো তখন তারা না বুঝলে শিক্ষকদের প্রশ্ন করার সুযোগ পেত। কিন্তু অনলাইন ক্লাসে অনেক সময় ঠিকভাবে কথাই বোঝা যায় না এবং প্রশ্ন করার সুযোগও থাকে না। এরকম সীমাবদ্ধতার কারণে তারা পড়া ঠিক ভাবে বুঝতেও পারে না ।অতএব আমরা কোনোভাবেই অনলাইন ক্লাসে সকল শিক্ষার্থীদের যথার্থ শিক্ষা এবং তাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারছে না।
যদি আমরা অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীর অবস্থান নিশ্চিত করতে চাই সেক্ষেত্রে সরকারকে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।সেক্ষেত্রে কম মূল্যে যেন ইন্টারনেট সেবা পেতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।আবার শিক্ষার্থীদের ও সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।এতে করে সমস্যার পুরোপুরি সমাধান না হলেও কিছুটা সমাধান সম্ভব।
এভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করলে আমরা হয়তো যে শিক্ষা সংকট এর মুখে পড়তে চলেছি তার থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাব বলে আশা করা যায়।