জামালপুর প্রতিনিধি
কাজ করা না হলেও সমুদয় টাকা উত্তোলন করে শিক্ষা অফিসারের একাউন্টে রাখা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা উৎকোচের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের প্রকল্পে অনিয়ম করার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানা গেছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বিদ্যালয় মেরামত-সংস্কার ও শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য ‘পিইডিপি-৪’ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই লাখ টাকা করে ৬ লাখ টাকা ও ৮টি বিদ্যালয়ে দেড় লাখ টাকা করে ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়া ১১০টি বিদ্যালয়ে রুটিন মেরামত কাজের জন্য প্রতিটিতে ৪০ হাজার টাকা করে ১০টি বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজের জন্য প্রত্যেকটিতে ২০ হাজার টাকা এবং নিয়মিত মেরামত বাবদ স্লিপে ১১০টি বিদ্যালয়ের কোনটিতে ৫০ হাজার টাকা ও কোনটিতে ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, অর্থ বছরের শুরুতেই এই অর্থ বরাদ্দ করা হলেও বিদ্যালয় নির্বাচন করতে সংশ্লিষ্টরা দীর্ঘ ১০ মাস সময় ব্যয় করে। অর্থ বছর শেষ হওয়ার মাত্র দেড় মাস আগে বিদ্যালয়গুলোর তালিকা প্রকাশ করা হয়।
বিদ্যালয়গুলোকে জানানো হয়, নিজের টাকায় প্রকল্পের কাজ শেষ করে ভাউচার দাখিল করতে হবে। গত ৩০ জুন এসব প্রকল্পের কাজ শেষ করার বিধান ছিল। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন প্রকল্পের কাজই সমাপ্ত হয়নি। আবার কোনটির কাজ শুরুই হয়নি। তালিকাভুক্ত বিদ্যালয়গুলো থেকে কাজ একশভাগ সমাপ্ত হয়েছে বলে ভাউচার সংগ্রহ করা হয়েছে। এই ভুয়া ভাউচার দাখিল করে প্রকল্পের সমুদয় টাকা উত্তোলন করা হয়। বরাদ্দ করা টাকা উত্তোলন করতে বিদ্যালয়গুলোর প্রধান, শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রতিদিন ধরনা দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রশিদা বেগম জানান, ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পারলে প্রকল্পের বরাদ্দ করা টাকা ল্যাপস হয়ে যাবে এবং তা ফেরত পাঠাতে হবে। তাই তিনি অগ্রিম ভাউচার সংগ্রহ করে প্রকল্পের সমুদয় টাকা উত্তোলন করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের একাউন্টে জমা রেখেছেন। প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে সেখান থেকে বিল পরিশোধ করা হবে। কিন্তু এই পরিশোধ দেখানো হবে ব্যাকডেটে; ৩০ জুনের মধ্যে।
সরকারি নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে শিক্ষা অফিসার কীভাবে ভুয়া ভাউচার দাখিল করে শতভাগ কাজ সমাপ্তির বিল উত্তোলন করলেন, অর্থ বছর শেষ হবার তিন সপ্তাহ পরেও বরাদ্দ করা টাকা স্কুলগুলোর মধ্যে বিতরণ না করে কীভাবে তিনি একাউন্টে জমা রাখলেন তার কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।